সংবাদচর্চা রিপোর্ট :
সংবিধান অনুযায়ী শেখ হাসিনা এখনো প্রধানমন্ত্রী বলে দাবি করেছেন বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সহ-সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা। তিনি বলেছেন, সংবিধানের ৫৭ (৩) অনুযায়ী পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী দায়িত্বভার নেওয়ার আগ পর্যন্ত পূর্ববর্তী প্রধানমন্ত্রী তার পদে বহাল থাকবে। সেই হিসেবে সংবিধান অনুযায়ী বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী এখনো শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (৮ অক্টোবর) বিকেল ৫টায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ‘সংবিধান: ক্ষমতার না জনতার?’ শীর্ষক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেছেন, বাংলাদেশের জন্মলগ্ন থেকে আজ পর্যন্ত সংবিধানের প্রত্যেকটা সংশোধনী হয়েছে ক্ষমতাকে দীর্ঘায়িত করতে। রাষ্ট্রের পুরো কাঠামোকে ভেঙে দিয়েছে চতুর্থ সংশোধনী।
বর্তমান অর্ন্তবর্তী সরকারের শপথ নিয়ে তিনি প্রশ্ন তুলেছেন। রুমিন ফারহানা বলেন, যদি বর্তমানে কোনো সংবিধান না থাকে তাহলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার এই সংবিধানের অধীনে শপথ নিলেন কীভাবে? একটা প্রশ্ন থেকেই যায়৷ যদি সংবিধান থেকে থাকে তাহলে সংবিধান অনুযায়ী এখনো বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
তিনি আরও বলেন, আমাদের সংবিধান প্রচুর পরিমাণে বৈপরীত্যে ভরা। সংবিধানের ২(ক) অনুচ্ছেদ অনুযায়ী রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম আবার এই সংবিধানের ৮ নম্বর অনুচ্ছেদে রাষ্ট্র পরিচালনার যে চারটি মূলনীতি আছে তার একটি হচ্ছে ধর্মনিরপেক্ষতা। সংবিধানে রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম রেখে আপনি কিভাবে ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাষ্ট্রের মূলনীতি করছেন?
ধর্মকে ধর্মের জায়গায় এবং রাজনীতিকে রাজনীতির জায়গায় রাখতে হবে, ধর্ম আর রাজনীতিকে একসাথে মেলানো যাবে না বলে মনে করেন বিএনপির এ নেতা।
চতুর্থ সংশোধনী রাষ্ট্রের কাঠামোকে ভেঙে দিয়েছে উল্লেখ করে ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা বলেন, এই সংশোধনীর মাধ্যমে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার এসেছে, এই সংশোধনীর মাধ্যমে বিচার বিভাগের স্বাধীনতাকে পুরোপুরি নির্বাহী বিভাগের হাতে দিয়ে ক্ষমতার পৃথকীকরণকে পুরোপুরি মুছে ফেলা হয়েছে। বাংলাদেশের সংবিধানের প্রতিটা সংশোধনী হয়েছে নিজের স্বার্থে, নিজের দলের স্বার্থে, নিজের দলকে ক্ষমতায় রাখার পথকে নিষ্কলুষ করার জন্য।
তিনি বলেন, আমি যেহেতু বিচার বিভাগের একজন সদস্য, আমি বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নিয়ে চিন্তিত। বাংলাদেশের প্রতিটি নাগরিককে বিচার বিভাগ নিয়ে আলাদাভাবে সচেতন হওয়া দরকার।
বিচার বিভাগ যদি স্বাধীন না হয়, বিচার বিভাগ যদি অন্য কোনো বিভাগের আয়ত্তে থাকে তখন কিন্তু সেই রাষ্ট্র আর রাষ্ট্র থাকে না। বাংলাদেশের ক্ষেত্রেও ঠিক তা-ই হয়েছে বলে জানান রুমিন ফারহানা।